ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে আমাদের একেক জনের
একেক রকম পরিকল্পনা থাকে। কোন এক কুরবানীর ঈদে বাড়ি যাওয়া নিয়ে একটি নতুন পরিকল্পনা
করেছিলাম। নতুন পোশাক বা রকমারি কোন সুস্বাদু খাবার নয়, বরং ঢাকা থেকে দীর্ঘপথ পায়ে
হেটে বাড়ি গিয়ে বাবা মায়ের সাথে ঈদ করব- এই পরিকল্পনা আমাকে পেয়ে বসেছিল। ঢাকার পাশ্ববর্তী
নরসিংদী জেলায় আমার গ্রামের বাড়ি। অনেক বছর ধরেই পড়াশোনা করার উদ্দেশ্যে রাজধানীতে
থাকা হতো। আমার এক বন্ধু ঈদের ছুটিতে বাড়ি যেতে ট্রেনের টিকেট পাওয়ার জন্য রাতে লাইনে
দাঁড়িয়েছিল। সে ভোরবেলায় টিকিট পেয়েছিল এবং রাজ্য বিজয়ী হাসি মুখে আমাদের কাছে এসেছিল।
তার বাড়ি যাবার টিকেট পাওয়ার আনন্দ দেখে আমি অভিভূত হয়ে গিয়েছিলাম। আর মাঝে মাঝেই আমি
বন্ধুদের সাথে গল্প করার সময়ে বলতাম যে, ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার জন্য বাসের বা ট্রেনের
টিকিট পেলে তোমরা যে খুশি হও! তা কিন্তু আমি কোন সময়েই অনুভব করতে পারি না। বন্ধুরা
তখন সুন্দরভাবে উত্তর দিত। আমাকে বলত, তুমি এই অনুভূতি বুঝবা না। তোমার বাড়ি ঢাকার কাছে
তো তাই। যখন মন চায় তখনই বাড়ি যেতে পারো। আমিও তখন হেসে উত্তর দিতাম। আরে ইচ্ছা করলে
তো আমার বাড়ি হেটেই যেতে পারি, তাই না? এ আর তেমন কঠিন কাজ কি! গল্প করার এ বিষয়টি
যেন কাল্পনিক ও অসত্য না হয়ে যায়, তাই আমি একবার কুরবানীর ঈদে তা সত্যে পরিণত করতে
দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়েছিলাম। বাড়ি যাবার পূর্বে ঢাকায় আমার বাসার বড় ভাইদের বিষয়টি বলেছিলাম।
কিন্তু উনারা হালকা ভাবে বিষয়টি নিয়েছিল এবং পাগলামী প্রলাপ বলে তা উড়িয়ে দিয়েছিল।
ঢাকার কাছে বাড়ি হওয়ায় আমি সবার পরে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম। প্রস্তুতি হিসেবে
নিয়েছিলাম গুগুলম্যাপের সহায়তা। পায়ে হেটে বাড়ি যাবার জন্য অনেক গবেষণা করে একটি সহজ
পথ বের করতে হয়েছিল। যার দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার। ঈদের প্রস্তুতি হিসেবে সাথে নিতে
হলো ব্যাগ ভর্তি কাপড়, পড়ার জন্য কিছু বই ও প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্র। ছোটদের ঈদ সালামী
দেয়ার জন্য নতুন টাকার নোট সংগ্রহ করতে না পেরে, কয়েকজনের কাছ থেকে ২টাকা ও ৫টাকার
অনেকগুলো কয়েন নিয়েছিলাম। সেগুলোর ওজনও ১কেজির বেশি হবে। ব্যাগটা প্রায় ১০ কেজির কম
ভারী হবে না। এছাড়াও ভাগিনার জন্য নিয়েছি নতুন
একটি ক্রিকেট ব্যাট। ব্যাট তো আর ব্যাগে ভরা যায় না, তাই তা হাতেই নিতে হয়েছিল।
যেহেতু দীর্ঘপথ হেটে যেতে হবে। তাই পাতলা
কাপড়ের জার্সি আর টাউজার পড়েছিলাম। আল্লাহর উপর ভরসা করে ঢাকা থেকে সকাল ৭:০০ টায় বাড়ির
জন্য যাত্রা শুরু করেছিলাম।
হেটে চলছি পিচঢালা রাস্তায়। বাড়ি যাওয়ার
জন্য গাড়িতে না চড়ে, পায়ে হেটে চলছি এক কঠিন সৌখিন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য। কাঁধে
ভারী এক ব্যাগ, হাতে ব্যাট। কেউ দেখলে ভাববে- কোন ক্রিকেট ম্যাচ খেলতে যাচ্ছি। হাটছি
আর হাটছি... যে পথে আমি সামনে এগিয়ে যাচ্ছিলাম, সেই পথে জীবনের প্রথম আমার পদচারণা
পড়েছে। এপথ পুরাটাই আমার অজানা ও অচেনা। গুগুলের কাছ থেকে যে সহায়তা পেয়েছিলাম তার
অকার্যকারিতা কিছুদূর যাওয়ার পরই বুঝতে পেরেছি। ফলে পথে কঠিন বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে যারা শুধুই যন্ত্র সহায়ক প্রযুক্তির উপর নির্ভর হয়ে যাই, তাদের সমস্যার
অন্ত নাই। ম্যাপের ছক অনুযায়ী সামনে এগুতে এগুতে পিচঢালা পথ পানির নিচে চলে যেতে দেখে
প্রথমবারের মত থমকে দাঁড়ালাম। তখন থেকেই ওই অচেনা যাত্রায় গুগুলের উপর থেকে আমার নিরর্ভরতা
কমতে শুরু করছিল। কোন জায়গায় কতটুকু পানি, তা ঠাওর করতে না পেরে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম।
রাস্তায় কোন পথিকও পাচ্ছিলাম না। যাদের কাছ থেকে পানির গভীরতা সম্পর্কে জেনে নিতে পারতাম।
পানিতে ডোবা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ভাবতে শুরু করেছিলাম। এখন কী করা যায়? কিছুক্ষণ পর
দেখলাম যে, এক অটোরিক্সা ডোবা রাস্তা দিয়ে আসছে। ভারসা পেলাম যে, পানি আমার বিপদ সীমা
পার করেনি। রাস্তায় হাটুর নিচ পর্যন্ত পানি ছিল। প্রায় ৫মিনিটে এ ডোবা রাস্তা পার হয়েছিলাম।
সামনে আরো কিছু দূর যাওয়ার পর একই সমস্যা। ভাবলাম যে, এবারও আগেকার মত রাস্তা হয়তো
সামান্য ডোবা হবে। কিন্তু না। এবার কিছুদূর এগুতেই জলাবদ্ধ রাস্তার পানি হাটুর উপর
পর্যন্ত অনুভব করছি। আমার প্যান্ট কিছুটা ভিজেও গিয়েছিল। পানির ভয়ে এ রাস্তা পরিহার
করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম যে, এই রাস্তা দিয়ে সামনে
এগুনো সম্ভব না। এদিকে আমার গুগুল সাহেবকে পুনরায় বাড়ি যাওয়ার রাস্তা সম্পর্কে জিজ্ঞেস
করছিলাম। কিন্তু তিনি বিকল্প কোন সমাধান দিতে পারছেন না। আমিও গুগুলকে ঠিকমত চালাতে
পারছিলাম না। গুগুল মিয়া আমাকে এ জলাবদ্ধ ডোবা পথেই বাড়ি যেতে বলছিল। এরই মধ্যে আমার
সম্মানিত মোবাইল এত চাপ নিতে না পেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যন্ত্রটির হঠাৎ এমন আচরণে অচেনা
পথে আমার গাইডকে হারিয়ে বড়ই অসহায়ত্ব অনুভব করছিলাম। কিন্তু ভাবতে থাকলাম যে, আগেকার
দিনের মানুষ তো এমন যন্ত্রের সহায়তা পেত না। তাহলে তারা কিভাবে জীবনের ঘনিষ্ট সমস্যাগুলোর
সমাধান করতো? তাই আমি যন্ত্রের যন্ত্রণা নির্ভরতা ছেড়ে এবার চললাম বিকল্প পথে, নিজস্ব
পদ্ধতিতে। পথের মানুষকে জিজ্ঞেস করে করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু পথিকদের জিজ্ঞস
করতে গিয়ে আরেক সমস্যায় পড়ছিলাম। আমি কোথায় যাব? এ প্রশ্নের উত্তরে আমি সঠিক ঠিকানা
বলতে পারছিলাম না। তাই বহুদূরের এক জায়গার নাম বলছিলাম। পথিকরা আমাকে পথ দেখিয়ে দিচ্ছিল
বটে, তবে সেই সাথে কিছুটা আশ্চর্যজনকভাবে আমার দিকে তাকাচ্ছিল। কারণ এতদূরের পথ যেতে
সাধারণত মানুষ বড় রাস্তা দিয়ে গাড়িতে যায়। কিন্তু আমাকে দেখে তারা কিছু বুঝে উঠার আগেই,
আমি তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে চলতে শুরু করছিলাম।
পথিকরা আমাকে কিছু বলার সুযোগ না পেয়ে, শুধু চেয়ে থাকছিল। আমার একান্ত ইচ্ছা
ছিল পায়ে হেটেই বাড়ি যাব। কোন ধরণেই যানবাহনের সহায়তা নিবো না- এব্যাপারে আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ
ছিলাম। কিন্তু বিকল্প রাস্তায় অগ্রসর হবার পথেই বালু নদী পাড় হতে হয়েছিল নৌকা দিয়ে।
প্রায় ৫মিনিটে নৌকায় চড়ে আমার কিছুটা বিশ্রামও হয়েছিল। নদীর স্বচ্ছ পানিতে হাত মুখ
ভালোভাবে ধুয়ে নিয়েছিলাম। এরপর বালুনদীর তীর ঘেষে পিচঢালা মনোরম রাস্তা দিয়ে আবার নতুন
করে হাটছিলাম। আমার হাতে ব্যাট দেখে একজন মুরব্বি মাঝি আদর করে ডেকে জানালেন যে, উনার
কাছে একটা বল আছে। নদী থেকে পেয়েছেন। কাকে দিবেন ভেবে পাচ্ছেন না। তিনি বললেন- তুমি
যেহেতু খেলাধুলা করো। আমার এই টেনিস বলটি নাও। বলটি আমি সাদরে গ্রহণ করেছিলাম। আমার
ব্যাটের সাথে বলের সখ্যতা রাস্তায় ভালো মতই চলছিল। হাটার পথে আমার ক্রিকেটার বেশটা
ভালোই উপভোগ করছিলাম। পথিমধ্যে এক কিশোর আমাকে বড় মাপের ক্রিকেটার ভেবে সেলফি তুলতে
চাইছিল। আমি তার আবেগ বুঝতে পেরে জানিয়ে দিলাম যে, ভাইয়া আমি কোন সেলিব্রেটি ক্রিকেটার
নই। কোন ক্লাবেও খেলি না। বেচারা তখন সেলফি তুলতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। দীর্ঘ হেটে চলা
পথে আরো কত কী যে ঘটল! তা তো আর লিখে বুঝাতে পারবো না। এ এক অন্যরকম অনুভ‚তি। কখনো গ্রামীণ
ছোট পিটঢালা রাস্তা, আবার কখনো বিশাল হাইওয়ে দিয়ে আমাকে সামনে এগিয়ে যেতে হয়েছিল। কখনো
খোলা মাঠের উপর দিয়ে তপ্ত রোদে পুড়ে পথ অতিক্রম করতে হয়েছিল। বিলের ধারের রাস্তা পার
হওয়ার সময়ে দুপুর বেলার প্রচণ্ড রোদে পানি থেকে
উঠে আসা ভ্যাপসা গরমে শরীরের কি যে কষ্ট হচ্ছিল, তা খুবই কঠিন ছিল। রোদ, গরম, বৃষ্টি,
তৃষ্ণা, ক্ষুধা সবই এই সফরে অনুভ‚ত হয়েছে। তবে সবকিছুকে উপভোগ করার মানসিকতা
নিয়েই এই যাত্রায় মনোস্থির করেছিলাম। হাটছিলাম আর নানা রকম দৃশ্য দেখে ভাবছিলাম যে,
আল্লাহর অপরূপ সৃষ্টির কথা। যাই হোক, দুপুর ১২টার দিকে রাস্তার পাশে এক মসজিদ পেয়ে
অজু করে নিয়েছিলাম এবং অল্প পরিমাণের পানিও পান করেছিলাম। মিনিট ৫ বিরতি দিয়ে আবার
হাটতে শুরু করেছিলাম। রাস্তায় অটো, টেম্পু, লেগুনা, রিক্সা, সিএনজি চালকরা আমাকে তাদের
যানবাহনে উঠার জন্য কত যে আবেদন করছিল! তার ইয়াত্তা নেই। আমিও নাছোড়া বান্দা! আমাকে
বিনা ভাড়ায় কেউ গাড়িতে উঠাতে চাইলেও আমি এযাত্রায় কোন গাড়িতে উঠবো না। রাস্তায় আমাকে
একজন রিক্সাওয়ালা তার রিক্সায় উঠাতে চাইলে আমি রাজি হইনি। ওই চালক প্রায় দুই ঘণ্টা
পরে আমাকে হাটতে দেখেন এবং আশ্চর্য হয়ে বললেন- ভাই আপনে পারেনও। কেমনে এতো দূর হেটে
আসলেন! আপনার কাছে টাকা না থাকলে আমার রিক্সায় উঠেন। আমি তাকে বলেছিলাম- ঢাকা থেকে
হাটছি, বাড়ি পর্যন্ত হেটেই যাবো। তিনি আর কোন কথা না বলে শুধু অবাক চোখে কতক্ষণ চেয়ে
থাকলেন। অতপর তার পক্ষ্মীরাজ রিক্সা নিয়ে চলে গেলেন।
জোহরের নামাজের জামায়াতের সময়ে রাস্তার পাশে
কোন মসজিদ না পেয়ে আরো সামনে এগিয়ে গিয়েছিলাম। দুপুর ২টার পর এক মসজিদে যাত্রা বিরতি
দিয়েছিলাম। বিরতিতে নামাজ পড়ে আমার মৃত মোবাইলটিকে জীবিত করার চেষ্টায় চার্জে লাগিয়েছিলাম।
মসজিদের বারান্দায় ক্লান্ত দেহটাকে অল্প সময়ের জন্য ছেড়ে দিলাম। প্রায় ১০ মিনিট বিশ্রামের
পর ভাবলাম যে, গন্তব্য বহুদূর। তাই থেমে গেলে চলবে না। আবার চললাম গন্তব্যে।
বর্ষাকালের বৃষ্টি আমার চলতি পথে এবার বাধা
হয়েছিল। বৃষ্টি আমাকে থমকে দিতে চাইছিল। তাই, বৃষ্টিতে ভেজা থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য
এক মুদি দোকানে অবস্থান নিয়েছিলাম। তখন দুপুরের খাবার হিসেবে দুইখানা কলা খেয়ে নিয়েছিলাম।
কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি থামলে আবার নতুন উদ্যোমে চললতে শুরু করলাম। দীর্ঘ হেটে চলার পথে
সবচেয়ে বেশি অসহযোগিতা করছিল আমার পাদুকা মশাই। জুতার কারণে হাটতে খুব কষ্ট হচ্ছিল।
আসরের নামাজের বিরতির সময়ে দেখলাম যে, পায়ে কয়েকটি ফোঁস্কা পড়ে গিয়েছে। নামাজের পর
পুনরায় হাটার সময়ে আমার পা দুটিকে ভালো ভাবে কাজ করাতে পারছিনা। আমার পা যেন রাস্তায়
আটকে যাচ্ছে। প্রতিটি কদমে আমাকে প্রচণ্ড পরিশ্রম করতে হচ্ছে।
প্রতিটি কদমে ব্যথা অনুভব করছিলাম। ছোট বেলায় পুকুর সেচে মাছ ধরার সময়ে কাঁদায় উরু
পর্যন্ত ডেবে যেত। তখন পা তুলে সামনে আরেকটি মাছ ধরতে যাওয়ার মানে ছিল কঠোর পরিশ্রম
করা। সফরের এ পর্যায়ে আমার কাছে তখন প্রতিটি পদক্ষেপ এমনই কঠিন মনে হচ্ছিল। তখনও রাস্তায়
আমাকে অহরহ রিক্সা তাদের যানে চড়ার জন্য অনুরোধ করে যাচ্ছিল। কিন্তু আমার অনঢ় মনোবল
ছিল যে, আমি হেটে বাড়ি যাবোই। ধীর গতিতে হাটতে হাটতে মাগরিবের নামাযের সময়ে আবার এক
মসজিদে নামাজ পড়েছি। কয়েক মিনিট আবার বিশ্রাম নিয়ে চলতে শুরু করি। এবার আমার বাড়ি আর
বেশি দূরে নয়। আর মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরের পথ। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় গ্রামীণ রাস্তাটা
একেবারে নিস্তব্ধ। গ্রামীণ এই রাস্তায় আলোরও কোন ব্যবস্থা নেই। আলোহীন এ রাস্তায় অচেনা
পথিকরা চলতে সমস্যায় পড়তে পারে। কিন্তু আমার জন্য এরাস্তায় কোন সমস্যা হলো না। কারণ
সারাদিন হাটতে হাটতে এখন আমি গন্তব্যের একেবারে শেষ প্রান্তে। এই রাস্তাটি আমার গ্রামের
প¦ার্শবর্তী গ্রামের রাস্তা। এপথের সবকিছু আমার খুবই পরিচিত।
আবশেষে এ সফরে হাটার ইতি টানতে পেরেছিলাম। আমি যখন বাড়ি পৌছেছিলাম তখন সময় সন্ধ্যা
৭:৪৫। বাড়ি পৌছার পর মা ও বাবা ঘটনা বুঝতে পেরে গিয়েছিলেন। তাই তখন বাবা-মায়ের কিছুটা
বকুনি হজম করতে হয়েছিল। আমি তখন বাবা মাকে মজা করে ঘটনাটা বর্ণনা করে শান্ত করেছিলাম।
বলেছিলাম- আগের মানুষ হেটে ঢাকায় যেতো, হজ্ব করতে যেতো। আমি দেখলাম তাদের মতো আমি কিছুটা
হলেও পারবো কিনা।
কুরবানীর ঈদ উদযাপনের পূর্ববর্তী হাটার এই বিশেষ
পরিকল্পনা মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে বাস্তবায়নে সফল হয়েছিলাম। প্রচণ্ড ইচ্ছা শক্তির প্রভাবেই আল্লাহর মেহেরবানীতে বাড়ি আসতে
পেরেছিলাম। আসলে মানুষ যদি কোন কাজে পূর্ণ আন্তরিকতা ও একনিষ্ঠতার সাথে ধৈর্যসহ লেগে
থাকে, তখন মহান রব তাকে ওই কাজ বাস্তবায়নে কোন না কোনভাবে অবশ্যই সফলতা দান করেন। জীবন
গড়ার জন্য সাহসীকতার সাথে বড় বড় পরিকল্পনা বাস্তবায়নে চাই অনঢ় মনোবল এবং কোনভাবেই হাল
ছেড়ে না দেয়া। প্রতিবন্ধকতাগুলো নিজেদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা দিয়ে সমাধান করার যোগ্যতাটাও
আমাদের জীবন গড়ায় খুব কার্যকর।
লেখক: মো. আলমগীর
0 Comments