Header Ads Widget

শিশুদের জন্য শিশু সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা

শিশুরাই সমাজ, দেশ ও বিশ্বের সেরা সম্পদ। আজকের শিশু আগামী দিনের দেশ ও জাতি গড়ার কারিগর। শিশুদের সুষ্ঠ বিকাশ ও পরিচর্যাই পারে আগামীর সুন্দর পৃথিবী গড়তে। সমৃদ্ধ পৃথিবীর জন্য শিশুর পরিচর্যাকে লক্ষ্য উদ্দেশ্য ধরেই শিশু সংগঠন গুলোর যাত্রা শুরু হয়।

সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মানুষই একমাত্র প্রাণি যাকে সুন্দর জীবন পরিচালনার জন্য নানা ভাবে শিক্ষা গ্রহণ করে বেড়ে উঠতে হয়। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের অধিকাংশ অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের শিক্ষা লাভের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে শুধুমাত্র একাডেমিক শিক্ষা ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকেই বুঝে থাকেন। ফলে অভিভাবকদের পক্ষ হতে শিশুদের শৈশবকাল থেকেই প্রতিষ্ঠানিক সিলেবাস ভিত্তিক পড়াশোনার জন্য তাদের উপর প্রতিযোগিতার প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হয়।

ব্যাগ ভর্তি বই নিয়ে স্কুল থেকে বাড়ি, বাড়ি থেকে কোচিং এবং কোচিং থেকে প্রাইভেট পর্যন্ত চলে একজন শিশুর নিত্যদিনের কাজ। এর ফলে প্রতিটি শিশু শৈশবকাল থেকেই মানসিক, নৈতিক ও শারীরিকভাবে বিকাশের সুষ্ঠ অধিকারে বাধা পাচ্ছে । আনন্দঘন পরিবেশে চাপমুক্তভাবে শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে শৈশব কৈশর কাটিয়ে বেড়ে উঠার অধিকার হতে শিশুরা হচ্ছে বঞ্চিত ।

আধুনিক সময়ে উন্নত প্রযুক্তির ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রের ব্যবহারের ফলে মানুষ আবেগ অনুভূতি অনেকাংশে হারিয়ে ফেলছে। ভার্চুয়াল জগতের অধিক ব্যবহারের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের বাস্তবিক জীবন। আমাদের দেশের শিশুরা  এর ক্ষতিকর প্রভাব হতে রক্ষা পাচ্ছে না। শিশুরাও আসক্ত হয়ে পড়েছে ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রের প্রতি। একক পরিবার সৃষ্টির ফলে শিশুরা সামাজিক জ্ঞানের পর্যাপ্ততা নিয়ে বেড়ে উঠতে পারছে না। অধিক মাত্রায় পরিবার কাঠামোর ভাঙ্গন ও পারিবারিক বিশৃঙ্খলার জন্য শিশুদের মানসিক বিকাশ হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত।

ফলে শিশুদের খোলা আকাশের নিচে উদার মানসিকতা নিয়ে বেড়ে উঠা, খেলার মাঠের দূরন্তপনা, রাতের আকাশের তারা গণনা, রাতে ঝিঁঝিঁ পোকার গান শোনা, নদীতে সাঁতার কাটা, বিলের পানিতে মাছ ধরা, অধিক অত্মীয় স্বজনের স্নেহ ও ভালোবাসা নিয়ে বেড়ে উঠাসহ ইত্যাদি আনন্দপূর্ণ শৈশব ও কৈশর কাটানো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

আগামীর বিশ্ব সুন্দরভাবে গড়ে তোলার জন্য শিশুদের প্রতিভার সুষ্ঠ বিকাশ, মূল্যবোধ ও নৈতিকতার উৎকর্ষ সাধন এবং শারীরিক সুঃস্থতা আবশ্যকীয় বিষয়। কিন্তু আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক ও শিক্ষা ব্যবস্থায় শিশুদের বেড়ে উঠার আবশ্যকীয় বিষয়গুলোর পরিচর্যার প্রচণ্ড অভাব রয়েছে। আমাদের দেশের শিশুরা বিভিন্ন ভাবে সামাজিক, নৈতিক ও শারীরিক বিকাশ সাধনের অধিকার হতে বঞ্চিত হচ্ছে।

১৯০৭ সালে সর্বপ্রথম যুদ্ধ হানাহানি কবলিত পৃথিবীর শিশুকিশোরদের নিরাপত্তা, কল্যাণ ও জনস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অবসর প্রাপ্ত জেনারেল লর্ড ব্যাডেন পাওয়েল “বয় স্কাউট” প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর্ মাধ্যমে শিশু সংগঠনগুলোর যাত্রা শুরু হয়।

আগামীর পৃথিবীকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার সাথে সাথে শিশুদের আনন্দময় শৈশব ও কৈশরের জন্য সকল শিশু সংগঠন নিরলসভাবে কাজ করে থাকে। শিশু সংগঠন গুলো শিশুদের নিয়ে যে সকল বিষয়ে কাজ করে থাকে:

  • 1.      শিশুদের দেশ প্রেমে উদ্বদ্ধ করে গড়ে তোলে
  • 2.      শিশুদের সামাজিকতা শেখায়
  • 3.      শিশুদের সৌন্দর্যবোধ বিকাশে সহায়তা করে
  • 4.      শিশুদের শারীরিক বিকাশে ভূমিকা রাখে
  • 5.      নৈতিকতা ও মূল্যবোধের উৎকর্ষতায় সহায়তা করে
  • 6.      শিশুদের দায়িত্ববোধ জাগিয়ে তোলে
  • 7.      শিশুদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করে
  • 8.      শিশুদের বিজ্ঞান মনস্ক করে গড়ে উঠতে সহায়তা করে
  • 9.      শিশুদের কোকারিকুলাম কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি করে

সকল শিশু সংগঠন গুলোই চায় শিশুরা যেন আগামীর পৃথিবী গড়ার জন্য তাদের আনন্দঘন শৈশব ও কৈশর কাটানোর অধিকার হতে বঞ্চিত না হয় এবং শিশুরা এই সুন্দর পৃথিবীতে সুন্দরভাবে বেড়ে উঠুক। তাই সক্রিয় শিশু সংগঠনের মাধ্যমেই শিশুরা তাদের অধিকার পেতে পারে।


Post a Comment

1 Comments

Unknown said…
চমৎকার লিখা